বন্ধুর গল্প

 

গল্পের নাম: "আলোর সন্ধান"

ধাপ ১: গ্রামের ছেলে রাহিম

ছোট্ট এক গ্রামে বাস করত রাহিম নামের এক কিশোর। সে খুব গরিব পরিবারের সন্তান। তার বাবা একজন মাটিকাটা শ্রমিক আর মা বাড়ির পাশে ছোট্ট সবজি বাগানে কাজ করতেন। রাহিম প্রতিদিন সকালে বাবার সঙ্গে মাঠে যেত, তারপর স্কুলে আসত। ক্লাসে সে খুব মনোযোগী ছিল, যদিও তার বই-খাতা পুরনো, জামাকাপড় ছেঁড়া। তবুও, সে নিজের স্বপ্ন হারায়নি—একদিন সে "বড় মানুষ" হবে, এমন স্বপ্ন সে বুকের গভীরে লালন করত।

ধাপ ২: বিপদের ছায়া

একদিন গ্রামের স্কুল বন্ধ হয়ে গেল। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কয়েক মাস সময় লাগবে। গ্রামের অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিল। রাহিমের মা বললেন, “তুই এখন বাবার সঙ্গে পুরো সময় কাজ কর।” কিন্তু রাহিম চুপচাপ সন্ধ্যায় পাশের গ্রামে হেঁটে গিয়ে খোলা মক্তবে বসে পড়াশোনা করতে লাগল। অনেকে হাসাহাসি করত, কিন্তু সে থামত না। বাড়ি ফিরে চুপচাপ মোমবাতির আলোয় পড়ত।

ধাপ ৩: নতুন পথ
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক যিনি অবসরপ্রাপ্ত, তিনি রাহিমের এই চেষ্টা দেখে মুগ্ধ হলেন। তিনি নিজের বাড়ির বারান্দায় কিছু ছেলেমেয়েকে পড়াতে শুরু করলেন এবং রাহিমকে নিজের হাতে আলাদা করে পড়াতেন। রাহিমের মেধা আর নিষ্ঠা দেখে তিনি

বলতেন, “তুই শুধু নিজের জন্য নয়, পুরো গ্রামের জন্য আলোর প্রদীপ হয়ে উঠবি একদিন।” এই কথাগুলো রাহিমকে সাহস জোগাতো।

ধাপ ৪: পরীক্ষার দিন

সময় গড়াল। রাহিম মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিল। তার মা-বাবা খুব উদ্বিগ্ন ছিল, কারণ এটাই প্রথম তাদের পরিবারের কেউ বড় পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। রাহিম পরীক্ষায় খুব ভালো করল। তার ফলাফল বের হওয়ার দিন পুরো গ্রাম যেন অপেক্ষায় ছিল। ফলাফল দেখে সবাই হতবাক—রাহিম বোর্ডে পঞ্চম হয়েছে! টেলিভিশনে তার সাক্ষাৎকারও সম্প্রচার হলো। সে বলল, “আমি শুধু নিজের জন্য নয়, আমার গ্রামের জন্য স্বপ্ন দেখি।”

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url