Best Romantic Novels: Love Written in Moonlight

 চাঁদের আলোয় লেখা ভালোবাসা

Best Romantic Novels


পর্ব ১: দেখা

রানির চোখে ঢাকার এই কলেজটা ছিল স্বপ্নের মতো। বই আর সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে পা দিয়েই তার মন যেন উড়ে গেল। গেট দিয়ে ঢোকার সময়ই সে প্রথম রুদ্রকে দেখে। ছেলেটি দাঁড়িয়ে ছিল একটা পুরোনো গাছের ছায়ায়। এক হাতে বই, অন্য হাতে কফি। রুদ্রের চোখে ছিল এক ধরনের একাকীত্ব—যেন সে এই পৃথিবীর থেকে কিছুটা দূরে, নিজের ভেতরে ডুবে থাকা কোনো চরিত্র।

ক্লাসের প্রথম দিনেই রানি খেয়াল করল, রুদ্র শুধু পড়াশোনায় মন দেয়। বন্ধু বলতে নেই, কথা বলে না বেশি কারো সঙ্গে। এমনকি টিফিনের সময়ও সে একা থাকে, জানালার পাশে বসে আকাশ দেখে। রানির কৌতূহল ক্রমশ বাড়তে থাকল। মেয়েরা তার পাশে বসতে চায় না, ছেলেরাও তাকে ভয় পায়, অথচ রানি অনুভব করল, এই ছেলেটির ভেতর এক অদ্ভুত আকর্ষণ আছে।

একদিন লাইব্রেরিতে রানি একটি বই খুঁজছিল। হঠাৎ পেছন থেকে একটি হাত এসে বইটা তার সামনে বাড়িয়ে দিল—রুদ্র। সে বলল, তুমি নিশ্চয় এইটাই খুঁজছিলে? রানি প্রথমবার তার কণ্ঠ শুনল—নরম, কিন্তু আত্মবিশ্বাসী। রুদ্রের চোখে চোখ রাখতেই রানির বুক কেঁপে উঠল। এই অচেনা অনুভূতির নাম কি ভালোবাসা?

সেদিন থেকেই রানি রুদ্রের প্রতি এক অদৃশ্য টান অনুভব করতে লাগল। ভালোবাসার গল্প কি তাহলে এখানেই শুরু?

পর্ব ২: কাছাকাছি

রুদ্রের সঙ্গে সেই ছোট্ট লাইব্রেরি সাক্ষাতের পর থেকে রানির মনে এক অদ্ভুত উথাল-পাথাল শুরু হলো। সে ভাবত, রুদ্র কেন এমন? কেন সবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখে? অন্যদের মতো সে হাসে না, আড্ডা দেয় না—তবু তার মধ্যে কী যেন একটা গভীরতা আছে, যেটা রানি আগে কখনো কাউকে দেখে অনুভব করেনি।

এরপর থেকে লাইব্রেরিতে তাদের দেখা হওয়া শুরু হলো প্রায় নিয়মিত। রুদ্র প্রতিদিন দুপুরে নির্দিষ্ট একটি কর্নারে বসে বই পড়ে, আর রানি কৌশলে সেই পাশেই বসে। একদিন সাহস করে রানি বলেই ফেলল, তুমি সবসময় এত চুপচাপ থাকো কেন? রুদ্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, শব্দ সবসময় সত্যি বলে না, নীরবতাই অনেক সময় বেশি বোঝায়।

এই এক লাইনে রানির মনে রুদ্রের প্রতি শ্রদ্ধা জন্মালো। এরপর থেকে মাঝে মাঝে তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করতে লাগল। রুদ্র রানিকে কিছু কবিতা পড়ে শোনাতো, আর রানি মুগ্ধ হয়ে শুনত। সে বুঝতে পারছিল, এই ছেলেটা শুধুই বই পড়ুয়া না, তার ভেতর আছে এক অসম্ভব সুন্দর মন।

একদিন বৃষ্টিভেজা বিকেলে দুজন একসঙ্গে কলেজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ রুদ্র বলল, “রানু, তুই জানিস? আমি তোকে দেখে শান্তি পাই।” রানির গাল লাল হয়ে গেল, কিছু বলার আগেই রুদ্র চলে গেল।

ভালোবাসা কি এইভাবে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে?

পর্ব ৩: দূরত্ব

রুদ্রের সেই কথাটি — তোকেই দেখে শান্তি পাই — রানির মনের ভিতরে গভীর দাগ কেটে গেল। সে রাতটা আর ঘুমোতে পারেনি। জীবনে প্রথমবার কেউ তাকে এমনভাবে অনুভব করেছে, এমন করে কিছু বলেছে। তবে পরদিন কলেজে গিয়ে সে চমকে উঠল—রুদ্র আসে না।

একদিন, দুইদিন... তিনদিন। প্রতিদিন রানি অপেক্ষা করে, লাইব্রেরি, ক্লাসরুম, বারান্দা—সব জায়গায় খোঁজে, কিন্তু রুদ্র নেই। কোথাও নেই। যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।

রানি প্রথমবার বোঝে, অপেক্ষা কতো কষ্টের হতে পারে। তার বুকের মধ্যে হাহাকার জাগে। মেসের ঘরে ফিরে সে একা চুপচাপ বসে থাকে। বই খুলে রুদ্রের পড়া কবিতাগুলো পড়ে, তার কণ্ঠস্বর মনে করে।

পাঁচ দিন পর হঠাৎ ক্লাসে রুদ্র ফিরে আসে। কিন্তু সে এখন যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন মানুষ। চোখের নিচে কালি, মুখে হাসি নেই, মন ভারী। রানি দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুই কোথায় ছিলি?
রুদ্র মাথা নিচু করে বলে, আমার মা মারা গেছেন। ক্যানসার ছিল। তোকে বলার সময় পাইনি…

রানির গলা শুকিয়ে যায়। সে চুপ করে রুদ্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছু বলতে পারে না। শুধু নিজের হাতটা ধীরে ধীরে রুদ্রের হাতের ওপর রাখে।

সেই প্রথমবার, রুদ্র কারো সামনে কাঁদে।

পর্ব ৪: স্বীকারোক্তি

মায়ের মৃত্যুর পর রুদ্র যেন আরেকজন হয়ে ওঠে। আগের মতো চুপচাপ নয়—সে এখন অনেক বেশি আত্মমগ্ন, অনেক বেশি ভেঙে পড়া। কিন্তু রানির উপস্থিতি যেন তাকে একটু একটু করে ফিরিয়ে আনে স্বাভাবিকতায়। তারা দুজন একসঙ্গে বসে পড়ে, গল্প করে, মাঝে মাঝে একসঙ্গে হাঁটে, রুদ্র রানিকে নিয়ে মায়ের গল্প বলে।

একদিন বিকেলে কলেজের ছাদে দাঁড়িয়ে রুদ্র বলল, “তুই জানিস, আমার মা চেয়েছিল আমি কাউকে সত্যিকারের ভালোবাসি। আমি তোকে ভালোবাসি রানু।” রানির চোখে পানি চলে আসে। সে কোনো কথা বলে না, শুধু ধীরে ধীরে রুদ্রের কাঁধে মাথা রাখে।

সেই দিন থেকেই তাদের সম্পর্ক যেন আরও গভীর হয়। তারা এখন শুধু ভালোবাসে না—একটা পৃথিবী গড়ে ফেলে নিজেদের মধ্যে। কিন্তু সুখ দীর্ঘস্থায়ী হয় না সবসময়।

হঠাৎ একদিন রুদ্র জানায়, তার বাবার চাকরির বদলির কারণে তাকে কানাডা যেতে হবে—চিরতরে।

রানির বুক ভেঙে যায়। সে ভাবে, এই কি তবে তাদের গল্পের শেষ?

পর্ব ৫: শেষ না হওয়া চিঠি

রুদ্র চলে যাওয়ার আগের রাতে, তারা কলেজের বারান্দায় বসেছিল। আকাশে ছিল পূর্ণিমার চাঁদ। রানির চোখে জল, রুদ্র তাকে শান্ত করছে। বলল, আমরা দূরে থাকব ঠিকই, কিন্তু তোর হৃদয়ে আমি থাকব—চিরকাল।

রানি কিছু বলতে পারল না। শুধু রুদ্রের হাতে একটা চিঠি দিল—একটা কাগজে লেখা তার ভালোবাসার স্বীকারোক্তি। বলল, তুই চলে যাওয়ার পর যখন মন খারাপ হবে, এটা পড়ে নিস।

রুদ্র হেসে মাথা নেড়ে চিঠিটা নিল। বলল, আর তুই? তোর কি আমার জন্য কিছু রেখে যাওয়া দরকার না?

রানি বলল, আমি নিজেই তোর জন্য রয়ে যাব।

রুদ্র চলে গেল পরদিন। রানির জীবন আবার আগের

মতো হয়ে গেল—কিন্তু অন্তরে একটা বিশাল শূন্যতা নিয়ে।

দুই বছর পর হঠাৎ রানির হাতে আসে এক খাম—বিদেশ থেকে পাঠানো। ভেতরে রুদ্রের চিঠি:

রানু, তোর দেওয়া চিঠিটা আমি হাজারবার পড়েছি। আজ আমি ফিরছি—চিরতরে। তোকে আবার জড়িয়ে ধরতে চাই, ঠিক সেই ছাদের নিচে।

রানির চোখে জল, মুখে হাসি। ভালোবাসা হয়তো কখনও হারায় না। কিছু ভালোবাসা সত্যিই… শেষ হয় না।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url