Funny story
গাবলু আর তার গোপন রহস্য
গাবলু ছিল এক ছোট্ট শহরের সবচেয়ে মজার ছেলে। তার চুল সবসময় এলোমেলো, পা ধুলোময়, আর মুখে একটা বড় হাসি। সবাই জানতো, গাবলু মজার একটা ছেলে, যার সঙ্গে সময় কাটালে একসাথে অনেক হাসাহাসি হয়।
একদিন গাবলু তার বন্ধুরা মিলে ঠিক করলো, তারা শহরের পেছনের বড় বাগানে গোপন ঘর বানাবে। কিন্তু সেই ঘরটা হবে এমন একটা জায়গা যেখানে কেউ সহজে ঢুকতে পারবে না। কারণ গাবলুর কাছে ছিল এক গোপন রহস্য, যেটা সে কাউকে বলতো না।
তার রহস্যটা ছিলো তার ‘জাদুকরী টুপি’।
এই টুপি পড়লেই যে কেউ পাখি বা বিড়াল কিংবা এমনকি বড় বড় হাতি দেখতে পাবে! গাবলু বলত। সবাই তখন হেসে উঠত, গাবলু, তোর টুপি না, তোর গল্পটাই বড় মজার।
কিন্তু গাবলু একদিন ঠিক করলো, এই টুপি দিয়ে সে সবার সামনে একটা ম্যাজিক শো দেখাবে। বন্ধুদের বলল, শোনো, আজ বাগানে গোপন ঘরে আসো, আমি তোমাদের একদম অবাক করে দেব।
সন্ধ্যার সময় সবাই গেলো বাগানে, গাবলুর গোপন ঘরে। ঘরটা ছিলো অনেক ছোট্ট কিন্তু অনেক পাকা, গাছ-গাছালির মধ্যে ঢাকা।
গাবলু টুপি পরে এসে বলল, তোমরা সবাই চোখ বন্ধ করো। আমি এখন টুপির ম্যাজিক শুরু করছি।
সবাই চোখ বন্ধ করে অপেক্ষা করল।
গাবলু হাত বাতাসে নাড়াতে লাগল, একটা হাসির আওয়াজ হলো, হঠাৎ ঘরের মধ্যে একদম ছোট্ট ছোট্ট পাখির গুঞ্জন শোনা গেলো। সবাই চোখ খুলে তাকালো, কিন্তু কোনো পাখি দেখা যায়নি।
দেখছো! আমি বলেছিলাম, আমার টুপির জাদু! গাবলু উচ্ছ্বসিত।
তাহলে এই পাখির গুঞ্জন কে করল?”ষ তার বন্ধু রাহুল জিজ্ঞেস করল।
গাবলু একটু লজ্জায় হাসতে লাগলো, হুম, আসলে... আমার ছোট ভাই পাখির আওয়াজ করছে!
সবার মধ্যে হাসির ঢেউ উঠল।
তারপর গাবলু আরও ম্যাজিক দেখানোর চেষ্টা করল, কিন্তু সবসময় তার ছোট ভাই তার ফাঁকি ধরিয়ে দিত।
একদিন গাবলুর টুপি হারিয়ে গেলো। সে খুঁজতে লাগলো শহর জুড়ে। তার বন্ধুরা সাহায্য করতে লাগল।
সবাই মিলে খুঁজতে খুঁজতে শহরের পার্কে গেলো। হঠাৎ তারা দেখলো, টুপি পরে বসে আছে এক বড় বিড়াল! বিড়ালটা খুব আরাম করে বসে ছিলো টুপি পরে, আর যেন সে একদম ‘রাজার মতো’ মেজাজে।
বিড়ালটা টুপি পরে কী করছে! গাবলু অবাক হয়ে বলল।
বিড়ালটা হঠাৎ দাঁড়িয়ে বলল, আমার নাম টুকটুক। আমি এখন টুপি পরে শহরের নতুন জাদুকর!
সবাই আবার হেসে উঠল। কারণ বিড়ালটা কথা বলছিলো!
গাবলু ভাবল, আমার টুপি আর আমার ম্যাজিক সত্যিই কেউ বিশ্বাস করে না, কিন্তু অন্তত সবাই হাসছে। আর এটাই তো আসল ম্যাজিক।
তারপর গাবলু আর তার বন্ধুরা মিলেমিশে শহরে হাসি-বিনোদন ছড়িয়ে দিলো, আর টুকটুক বিড়ালটাও তাদের সঙ্গে ছিলো।
গাবলু আর তার গোপন রহস্য (বিস্তৃত সংস্করণ)
— দ্বিতীয় অধ্যায় —
টুকটুক বিড়ালটাকে সবাই দেখে অবাক, কিন্তু টুকটুক এতটা মজার যে কারো ভয় পেল না। সে যেখানেই যেতো, সবাই তার পেছনে হাঁটত। টুকটুক একদিন গাবলুর কাছে এলো আর বলল, তুই আমার জন্য একটা ম্যাজিক শো করবি? আমি তো এখন টুপি পরে জাদুকর!
গাবলু একটু বিব্রত হলেও হাসলো, ঠিক আছে, কিন্তু আমার টুপি ফেরত দে আগে।
ওটা তো আমার মাথায় আছে, তুই যা করিস! টুকটুক বললো।
গাবলু ভাবল, এবার তো টুপি ছাড়াই ম্যাজিক দেখাতে
হবে।
সে তার বন্ধুদের বলল, আমাদের একটা নতুন প্ল্যান আছে, জাদু না হলেও আমরা সবাই মিলে সবাইকে হাসাবো!
বন্ধুরা খুব খুশি হলো। তারা সবাই একসাথে ভাবলো কী করলে মজাদার হবে।
গাবলু প্রথমে ভাবল, শহরের বাজারে একটা মজার গেম আয়োজন করবে। সে বাজারে গিয়ে সবাইকে ডাক দিলো—আজ বিকেলে আমার নতুন ম্যাজিক শো!
বাজারের মানুষগুলো আসতে শুরু করল। গাবলু দাঁড়িয়ে বলল, আমি এখন এমন ম্যাজিক দেখাবো, যেটা দেখলে তোমরা সবাই হাসতে হাসতে পেটে ব্যাথা পাবে!
তারপর সে একটা পুরনো বক্স আনল আর বলল, এই বক্সের মধ্যে আমি এখন থেকে শুধু মজার জিনিস রাখব।
বক্স খোলার সঙ্গে সঙ্গে বের হলো অনেক রঙিন গোলাপ, একটা পুতুল যা নাচতে শুরু করল, আর হঠাৎ করেই বক্স থেকে বের হলো এক ছোট্ট বাঁশি, যেটা বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে গান শুরু হলো।
লোকজন মুগ্ধ হয়ে উঠল। কিন্তু হঠাৎ বাঁশিটি গাবলুর হাতে খসলে গেলো আর সে গান বাজানো বন্ধ হয়ে গেলো।
সবাই হেসে উঠল। গাবলু নিজেও হাসল, দেখো, এটা ছিলো আমার ম্যাজিক ফেইল!
তারপর গাবলুর বন্ধু রাহুল তার পকেট থেকে একটা রংধনু-colored চশমা বের করলো আর বলল, এই চশমা পরে কেউ দুঃখ দেখবে না।
গাবলু চশমা পরে বলল, আমি এখন দুঃখ মুছে ফেলতে পারি!
হঠাৎ সে হাসতে হাসতে জোরে একটা ঠাট্টা করলো আর বলল, আরে, আমি নিজেই দুঃখের ডাক্তারের মত দেখাচ্ছি! সবাই আরেকবার হাসির রোল ধরল।
তৃতীয় অধ্যায়: টুকটুক বিড়ালের বড় প্রহেলিকা
একদিন টুকটুক বিড়াল গাবলুর কাছে এলো খুব মনের ভেতর কিছু বলতে চেয়ে।
গাবলু, আমি জানি তুই মজা করতে ভালোবাসিস, কিন্তু আমি সত্যি সত্যি একটা বড় রহস্য জানি।
কী রহস্য? গাবলু আগ্রহে জিজ্ঞেস করল।
“আমি আসলে একটা বিশেষ বিড়াল, যে রাতে জাদুর শক্তি পায়। কিন্তু সেই শক্তি তখনই কাজে লাগাতে পারি, যখন কেউ আমার জন্য সত্যি সত্যি হাসে।
গাবলু ভাবল, ‘অরে বাহ! তাহলে আমাদের হাসি তো একদম গোপন অস্ত্র।’
তো আমরা সবাই মিলে শহরটা হাসির মাধ্যমে জাদুকরী করব! টুকটুক বলল।
তারা একসাথে পরিকল্পনা করল, পরের দিন শহরের চতুর্থপাটে একটি বড় হাসির উৎসব করবে যেখানে সবাই হাসবে, নাচবে আর মজা করবে।
চতুর্থ অধ্যায়: হাসির উৎসব
পরের দিন সকালে গাবলু আর তার বন্ধুরা শহরের লোকজনকে নিয়ে বড় মাঠে জমায়েত হলো। তারা একটি মঞ্চ সাজালো। গাবলু তার টুপি না থাকলেও ছোট ছোট নাটক করল, যেগুলো ছিলো মজার ও হাস্যকর।
তার বন্ধুরা গান গাইল, হাসির কৌতুক করল, আর টুকটুক বিড়াল ছোট ছোট জাদুর ছায়া খেলতে শুরু করল।লোকেরা এত হাসল যে কেউ কেউ চোখে জল তুলল, আর হাসির শব্দ দূরে দূরে ছড়িয়ে পড়ল।
হাসির মাঝেই টুকটুক বলল, তোমাদের হাসি আমার শক্তি! আমি এখন জাদুর শক্তি পাই!
হঠাৎ টুকটুকের চারপাশে এক রঙিন আলো ঝলমল করতে শুরু করল, আর সবাই বিস্ময়ে তাকিয়ে রইল।গাবলু আনন্দে বলল, দেখো, সত্যিই হাসি আমাদের জাদু!
পঞ্চম অধ্যায়: মজার মিশন
হাসির উৎসব শেষ হওয়ার পর গাবলু আর তার বন্ধুরা ঠিক করল, তারা প্রত্যেক সপ্তাহে এমন মজার কাজ করবে, যাতে শহরের সবাই সুখী থাকে।
গাবলু তার ‘জাদুকরী টুপি’ আর টুকটুক বিড়ালকে নিয়ে শহরজুড়ে মজার মিশন শুরু করল —বাড়ির সবাইকে হাসানোস্কুলে ছোটদের হাসানোদোকানে সবাইকে মজার কথা বলা আর রাতের বেলা গোপনে সবার দরজায় মজার নোট রেখে যাওয়া
শহরের সবাই একসাথে হাসতে হাসতে জীবনের সব দুঃখ ভুলে যায়।