Cartoon stories for kids: Rupsha by the magical river

 রূপসা জাদুর নদীর পারে

A fairly tall


ধাপ ১: রহস্যময় নদীর গল্প ও অভিযাত্রার শুরু 

অনেক দিন আগের কথা। সুর্যালোক রাজ্য নামে একটি সুন্দর রাজ্য ছিল পাহাড় আর নদীঘেরা। এই রাজ্য ছিল শান্তিপূর্ণ, প্রকৃতিতে ভরা এবং প্রজাদের সুখ-সুবিধায় ভরপুর। কিন্তু রাজ্যের সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ংকর বিষয় ছিল একটি নদী—নাম "ঝলমলে জলধারা"। এই নদী ছিল খুবই রহস্যময়। কেউ তার পাশে যেত না, পানিতে হাতও দিত না।

কারণ, প্রাচীনকাল থেকে লোকদের মধ্যে প্রচলিত ছিল এক কিংবদন্তি। বলা হতো, এই নদীর গভীর এক ঝর্ণা আছে, যার পানি অলৌকিক। যদি কোনো সৎ, সাহসী ও নিঃস্বার্থ ব্যক্তি সেই পানিতে স্নান বা পান করে, তাহলে সে হয়ে উঠবে মহাশক্তির অধিকারী। তবে যদি মিথ্যাবাদী বা লোভী কেউ তা ছোঁয়, তাহলে সে অভিশপ্ত হবে চিরজীবনের জন্য।

এই গল্প শুনে বড় হয়েছে রাজা ধর্মবীরের একমাত্র ছেলে, রাজপুত্র অরুণ। সে ছোটবেলা থেকেই ছিল সাহসী, কৌতূহলী এবং দয়ালু। গরিবদের পাশে দাঁড়ানো, অসুস্থ পশুপাখিকে সাহায্য করা—এসব ছিল তার স্বভাব।

এক বছর রাজ্যে খরা দেখা দেয়। মাঠে ফসল হয় না, নদীগুলো শুকিয়ে যায়, প্রজারা ক্ষুধায় কাতর। অরুণ দেখে তার বাবা-মা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তখন তার মনে পড়ে যায় ঝলমলে জলধারা নদীর কথা।

সে ভাবে, যদি সত্যিই সেই অলৌকিক পানির শক্তি পাওয়া যায়, তাহলে সে রাজ্যকে রক্ষা করতে পারবে।

সে কোনো দ্বিধা না করে সিদ্ধান্ত নেয়, আমি সেই ঝর্ণা খুঁজে বের করব, এবং প্রমাণ করব আমি সত্যিই সাহসী ও সৎ একজন।

পরদিন সকালে, সকলের অজান্তে, সে প্রিয় ঘোড়া বিজয়কে নিয়ে রওনা হয় এক দুর্ধর্ষ অভিযানে।

ধাপ ২: বিপদের মুখে সাহসিকতা ও সহানুভূতির প্রমাণ 

অরুণের যাত্রা ছিল কণ্টকাকীর্ণ। প্রথমেই তাকে পার হতে হয় একটি ঘন অরণ্য, যেখানে দিনের আলোও পাতার ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করে না। জঙ্গলজুড়ে নানা রকম শব্দ—বন্য প্রাণীর ডাক, পাতার খসখসানি। কিন্তু অরুণ ভয় পায় না, বরং ঘোড়াকে সাহস দিয়ে এগিয়ে চলে।

কিছুদূর গেলে সে দেখতে পায়, এক বৃদ্ধ গাছতলায় বসে কাঁপছেন। তার পোশাক ছেঁড়া, চোখে দৃষ্টি নেই। অরুণ ঘোড়া থামিয়ে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, ঠাকুরদা, আপনি এখানে কী করছেন একা?

বৃদ্ধ বলেন, আমি নদীর পবিত্র পানি খুঁজতে বের হয়েছিলাম। শুনেছি ওতে চোখ ভালো হয়। কিন্তু পথ হারিয়েছি। কেউ সাহায্য করছে না। অরুণ নিজের পানির বোতল থেকে তাকে পানি দেয়, তাকে কাঁধে ভর করে একটি ঝোঁপ ছায়ায় বসায়। হঠাৎ বৃদ্ধের চোখে একটু আলো ফিরে আসে। তিনি হেসে বলেন, তুমি সৎ ও সহানুভূতিশীল। উত্তরদিকে তিনটি পাথর আছে, তার পরেই সেই অলৌকিক ঝর্ণা।

বৃদ্ধকে বিদায় জানিয়ে অরুণ এগিয়ে চলে। হঠাৎ সামনে এক বিশাল অজগর এসে দাঁড়ায়। ঘোড়া থেমে যায়, কিন্তু অরুণ ভয় না পেয়ে বলে, আমি তোমার শত্রু নই। আমি সত্য খুঁজতে চলেছি।

অজগর তার বিশাল দেহ সরিয়ে পথ ছেড়ে দেয়।

পরের চ্যালেঞ্জ ছিল পাহাড়ি খাঁদ। নিচে গভীর খাদ। সেতু ভেঙে গেছে বহুদিন। অরুণ দেখে একদল বানর লতা ধরে পার হচ্ছে। সে বানরদের দেখাদেখি নিজের রশি দিয়ে গাছ বাঁধে এবং সাহস করে পার হয়।

এইভাবে প্রতিটি বিপদে সে নিজের মনোবল, বুদ্ধি এবং সহানুভূতি দিয়ে এগিয়ে চলে সত্যের পথে।

ধাপ ৩: ঝর্ণার সামনে অরুণের পরীক্ষার মুহূর্ত 

ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। অবশেষে অরুণ এক খোলা জায়গায় পৌঁছায়, যেখানে সূর্যরশ্মি পানির ফোঁটার উপর পড়ে রূপালি আলো তৈরি করছে। এই ছিল সেই রহস্যময় ঝলমলে ঝর্ণা। আশেপাশে কোনো শব্দ নেই—শুধু ঝর্ণার কুলকুল শব্দ, পাখির গান আর হালকা বাতাস।

ঝর্ণার পাশে একটি পাথরের ফলক ছিল। তাতে খোদাই করা—
এই জল শুধুমাত্র সৎ, সাহসী ও পরোপকারী হৃদয়ের জন্য। বাকিদের জন্য এটি অন্ধকারের দরজা।

অরুণ ফলকটি পড়ে চুপ হয়ে যায়। তার মনে প্রশ্ন জাগে সে কি সত্যিই যোগ্য? তার ভিতরে ভয়, উত্তেজনা এবং আত্মবিশ্বাস একসাথে কাজ করে।

সে নিজেকে মনে করিয়ে দেয়—সে বৃদ্ধকে সাহায্য করেছে, অজগরের সামনে ভয় পায়নি, বানরের উপায় অবলম্বন করে বিপদে সাহস দেখিয়েছে। সে কারও ক্ষতি করেনি, বরং সহযোগিতাই করেছে।

অরুণ বোতলে করে পানি তোলে, চোখ বন্ধ করে এক ঢোক পান করে।

হঠাৎ ঝর্ণার পানি আলো ছড়াতে শুরু করে, চারপাশ ঝলসে ওঠে এক উজ্জ্বল আলোয়। বাতাসে ভেসে আসে এক মিষ্টি সুর। তারপর ঝর্ণার জলরাশির মধ্যে থেকে উঠে আসে এক আলোকিত রমণী। তিনি পরিধানে জলরঙা, কণ্ঠে কোমলতা আর চোখে আকাশের দীপ্তি।

তিনি বলেন, রাজপুত্র অরুণ, বহু বছর ধরে আমি অপেক্ষা করেছি এমন একজনের, যার হৃদয় সত্য সাহস ও দয়ায় পূর্ণ। তুমি সেই নির্বাচিত ব্যক্তি। এই লাঠি তোমার হাতে তুলে দিলাম। এর সাহায্যে তুমি পৃথিবীর যেকোনো অন্ধকার দূর করতে পারবে।

অরুণের হাতে উঠে আসে একটি উজ্জ্বল জাদুকরী লাঠি। সে অনুভব করে—এই লাঠি নয়, বরং সত্যতা আর দয়াই তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

ধাপ ৪: রাজ্যে ফিরে আসা ও আলোর পথে যাত্রা (≈৩৫০ শব্দ)

অরুণ রাজ্যে ফিরে আসে এক নতুন মানুষ হয়ে। তার মুখে দীপ্তি, হাতে জাদুকরী লাঠি। প্রাসাদের দ্বার রক্ষীরা প্রথমে চিনতে পারে না। রাজা-রানী দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন, চোখে জল নিয়ে বলেন, তুমি ফিরে এসেছ, আর তুমি বদলে গেছ এক সত্যিকারের নায়কে। 

অরুণ রাজসভায় সকলকে ঘটনাটি খুলে বলে। রাজ্যের জনগণ বিস্ময় আর আনন্দে ফেটে পড়ে। তবে অরুণ অহংকার করে না। সে বলে, এই শক্তি আমার নয়—এই শক্তি তাদের জন্য যারা সৎ, সাহসী ও সাহায্য করতে চায়।

পরদিন থেকেই অরুণ শুরু করে তার ন্যায়ের অভিযান। যেখানে দরিদ্র মানুষ আছে, সেখানে সে খাবার পাঠায়। যেখানে রোগ আছে, সেখানে সে লাঠির ছোঁয়ায় নিরাময় ঘটায়। একবার এক গ্রামে জলাভাব হলে, সে মাটিতে লাঠি ছুঁইয়ে দেয়—তখনই এক ঝর্ণা ফেটে বের হয় বিশুদ্ধ পানি।

লোকেরা তাকে ডাকে আলোর রাজপুত্র নামে। কিন্তু অরুণ নিজেকে সবসময় জনগণের সেবক হিসেবেই পরিচয় দেয়।

সে শিশুদের শিখায় সত্য বলো, সাহস রাখো, আর কখনো কাউকে ছোট মনে কোরো না।

তার এই শিক্ষা পুরো রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ঢুকে পড়ে ঝলমলে জলধারার গল্প। শিশুরা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মায়ের কাছে শুনতে চায় আলোর রাজপুত্রের গল্প।

এইভাবে রাজকুমার অরুণ হয়ে ওঠে ইতিহাসের এক চিরন্তন আলো, যে সত্য, দয়া ও সাহসে জয় করে এক কাল্পনিক রাজ্য—আর চিরকাল শিশুদের হৃদয়ে বেঁচে থাকে এক আদর্শ নায়ক হয়ে।

সাহস ও দয়ায় পূর্ণ। তুমি সেই নির্বাচিত ব্যক্তি। এই লাঠি তোমার হাতে তুলে দিলাম। এর সাহায্যে তুমি পৃথিবীর যেকোনো অন্ধকার দূর করতে পারবে।

অরুণের হাতে উঠে আসে একটি উজ্জ্বল জাদুকরী লাঠি। সে অনুভব করে—এই লাঠি নয়, বরং সত্যতা আর দয়াই তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
whatsapp" viewbox="0 0 512 512" stroke="none" fill="currentColor">