Funny jokes: The donkey when a professor.
The donkey when a professor.
গাধা যখন অধ্যাপক!
এই গ্রামে বাস করতেন এক অদ্ভুত লোক—নাম তার লালচাঁদ। লোকটা খুব বেশি পড়াশোনা করেননি, কিন্তু তার ধারণা ছিল তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি বলতেন, আইনস্টাইন যদি আমার চাচার ছেলে হতো, তাহলে আমি তাকে ম্যাট্রিক পাস করাতে পারতাম।
একদিন লালচাঁদের মাথায় বুদ্ধির একটা বোমা ফাটল। তিনি ঘোষণা দিলেন, আমি একটা স্কুল খুলবো, আর প্রধান শিক্ষক হবে গাধা!
গ্রামের লোকজন প্রথমে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগল। গাধা শিক্ষক? তাহলে ছাত্ররা কি হবে? বাঁদর?
কিন্তু লালচাঁদ থামবার পাত্র নন। তিনি গাধা খুঁজতে বেরিয়ে পড়লেন। তিন দিন ঘুরে একদিন সন্ধ্যায় ফিরে এলেন এক বিশাল ধূসর রঙের গাধা নিয়ে, যার চোখে চশমা আর গলায় টাই বাঁধা!
এই হলো আমাদের অধ্যাপক গাধানন্দ! গর্বভরে ঘোষণা করলেন লালচাঁদ।
গাধানন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু হলো নাম দিয়ে — আধুনিক উচ্চতর গাধাবিদ্যা কেন্দ্র”। লালচাঁদ নিজে প্রিন্সিপাল, আর গাধানন্দ প্রধান শিক্ষক। প্রথম দিনেই
গাধানন্দের সামনে চারজন ছাত্র এসে হাজির হলো — একটি মুরগি, একটি ছাগল, লালচাঁদের ভাতিজা বটু, আর পাশের গ্রামের পাগলা হরি।
প্রথম ক্লাস: অদ্ভুত অঙ্ক
ছাগল বললো, ছয়!
মুরগি ডিম পেড়ে ফেলে দিল উত্তেজনায়।
পাগলা হরি বললো, এই প্রশ্নটা মহাভারতে ছিল না।
আর বটু বললো, স্যার, আপনি ঘাস খাবেন?
লালচাঁদ গম্ভীর গলায় বললেন, গাধানন্দ এখন নীরব দর্শক। ওর শিক্ষা পদ্ধতি নীরব অভিব্যক্তিময়।
পরের দিন গাধানন্দ পড়াতে এলেন একটা সাদা খাতা
নিয়ে। খাতার প্রতিটি পাতায় কিছুই লেখা নেই। লালচাঁদ ব্যাখ্যা দিলেন, এই হচ্ছে নিরাকার জ্ঞানের প্রতীক। দেখো, বাচ্চারা, জ্ঞানকে খালি চোখে ধরা যায় না। এই খাতা তোমাদের ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি।
বটু বললো, ভবিষ্যৎ এমন ফাঁকা কেন, স্যার?
লালচাঁদ বললেন, কারণ ভবিষ্যৎ এখনো লেখা হয়নি!
দ্বিতীয় ক্লাস: বিজ্ঞান যখন ব্যাঙের লাফ
ছাগল বললো, কারণ চায়ে চিনি বেশি হলে হঠাৎ প্রেম জাগে।
পাগলা হরি বললো, “আমি একবার চা খেয়ে প্রেমে
পড়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু সে চা খেত না!”
মুরগি আবার ডিম পেড়ে ফেললো।
গাধানন্দ হঠাৎ একটা উঁচু হেঁচকি তুলে বললো, হেঁয়্যি হেঁয়্যি!
লালচাঁদ তৎক্ষণাৎ বললেন, দেখো, গাধানন্দ কী চমৎকারভাবে উৎসাহ দিচ্ছে! ও বলছে, বিজ্ঞান চায়ের মতো উষ্ণ হওয়া দরকার!
তৃতীয় ক্লাস: ইতিহাসের হাসাহাসি
লালচাঁদ বললেন, আজ ইতিহাস পড়ানো হবে। গাধানন্দ ব্যাখ্যা করবেন—পানিপথের যুদ্ধ কেন হয়েছিল।গাধানন্দ কিছু না বলে ঘাস চিবাতে লাগলো।
পাগলা হরি জিজ্ঞাসা করলো, স্যার, গাধা কি মহাভারতেও ছিল?
ছাগল বললো, আর্যদের ঘোড়া ছিল, গাধা না।
মুরগি আবার একটা ডিম পেড়ে ফেললো, এইবার একটু বড়।
স্কুলে পরিদর্শক আসা
তিনি এসে ক্লাসে ঢুকলেন। গাধানন্দ তখন ঘুমাচ্ছে।
কর্মকর্তা চিৎকার করে বললেন, এটা কেমন স্কুল? শিক্ষক ঘুমায়?
লালচাঁদ গম্ভীর মুখে বললেন, স্যার, উনি ধ্যান করছেন। ওনার শিক্ষা পদ্ধতি অত্যন্ত আধুনিক — মনের ভিতরেই পাঠ দিচ্ছেন।
কর্মকর্তা বললেন, আমি তো কোনো পড়াশোনার চিহ্নই দেখতে পাচ্ছি না।
লালচাঁদ বললেন, কাজ হচ্ছে স্যারের ভিতরে ভিতরে। আমাদের ছাত্ররা এখনো গাধা থেকে মানুষ হবার পথে।
ঠিক তখন পাগলা হরি বললো, স্যার, আমি এখন কবিতা লিখি —
‘গাধার চোখে চশমা দেখে,
মনটা গেল কেমন যেন কেঁপে।’
গাধা যখন স্যার হয়,
মেধা তখন বনে খায়!”
চূড়ান্ত পরিণতি
কিন্তু একদিন গাধানন্দ স্কুল ফাঁকি দিয়ে মাঠে ঘাস খেতে চলে গেল। লালচাঁদ দৌড়ে গিয়ে ধরতে গেলেন, কিন্তু গাধানন্দ হঠাৎ হি-হি করে লাফিয়ে এক খালের ওপারে চলে গেল।
তারপর লালচাঁদ ঘোষণা করলেন, আমাদের অধ্যাপক এখন গবেষণায় যাচ্ছেন। তিনি আমেরিকায় পিএইচডি করবেন!
ছাত্ররা বললো, স্যার, আমরাও যেতে চাই! লালচাঁদ বললেন, তোমাদের গবেষণা হবে ঘাসের উপকারিতা নিয়ে।
তারপর গ্রামের লোক বুঝলো, তারা এক বিশাল নাটকের অংশ ছিল। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, ওই স্কুলের ছাত্ররা আজও অদ্ভুতভাবে সৃষ্টিশীল। পাগলা হরি এখন গাধা কবি, বটু হয়েছে ঘাস বিজ্ঞানী, ছাগল একটা নাটকে অভিনয় করছে, আর মুরগি প্রতিদিন একটা করে ডিম দেয়—কখনো ছোট, কখনো বড়, কখনো পেঁচার মতো গোল!
গাধানন্দের আন্তর্জাতিক খ্যাতি
গাধানন্দের বিদ্যাবুদ্ধির গল্প কেবল বোড়াবুড়ি গ্রামে নয়, ছড়িয়ে পড়লো পুরো উপজেলায়। স্থানীয় পত্রিকায় বড় হেডলাইন ছাপা হলো:
গাধা যখন শিক্ষক: বোড়াবুড়িতে শিক্ষার নবজাগরণ
এতে লালচাঁদের নামও উঠে এলো। তিনি নিজেকে শিক্ষা সংস্কারক ঘোষণা করলেন এবং নতুন বুদ্ধি এলো—প্রতিটি পশুর জন্য আলাদা পাঠক্রম!
তিনি বললেন, আমরা পশুদের ভাষা বুঝে পড়াবো! মুরগির জন্য ডিম-অর্থনীতি, ছাগলের জন্য লাফ-শারীরবিদ্যা, আর গরুর জন্য ঘন্টা-বিজ্ঞান! পরদিন ক্লাসে গাধানন্দ এল এক বিশাল ঘন্টা বয়ে, গলায় গামছা বাঁধা, আর পিঠে টেপ দিয়ে লেখা স্মার্ট শিক্ষক। এই দৃশ্য দেখে ছাত্ররা হেসে কুঁকড়ে পড়লো।
মুরগির বিপ্লব!
মুরগিটি, যে এতদিন ধরে ক্লাসে ডিম দিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ ঘোষণা করলো, আমি আর শুধু ডিম দিব না, এবার আমি ‘ডিমতত্ত্ব’ পড়াবো।
লালচাঁদ এক মুহূর্ত থেমে বললেন, তোমাকে আমি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি! এবার থেকে তুমি গাধানন্দের সহকারী—ড. চিকেনরানী!
এরপর শুরু হলো ডিমতত্ত্ব পাঠ:
-
ডিম আগে না মুরগি—দার্শনিক প্রশ্ন
-
ডিম ফাটানোর কোণ থেকে জ্যামিতি
-
ডিম সিদ্ধ হওয়ার তাপমাত্রা এবং আবেগ
ছাত্ররা পাগলের মতো নোট নিচ্ছে। এমনকি ছাগল রঙিন খাতায় ডিমের ছবি আঁকতে শুরু করলো।
বাহারগঞ্জ কলেজের চ্যালেঞ্জ
তবে এত কিছুর মধ্যেও বিপদ ঘনিয়ে এলো। পাশের গ্রামের বাহারগঞ্জ কলেজ থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী এল গাধানন্দকে চ্যালেঞ্জ জানাতে।
তাদের নেতা ছিল জিনিয়াস জামান—একজন স্বঘোষিত গণিতবিদ, যে নিজের মোবাইল ক্যালকুলেটর দিয়ে সবার সামনে যোগ-বিয়োগ করত।
সে বললো, তোমাদের গাধা যদি সত্যিই শিক্ষক হয়, তাহলে সে আমাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিক—‘দুই গরু একসাথে ঘাস খায় ৪ ঘণ্টা, তাহলে ৮ গরু খাবে কত ঘন্টায়?
গাধানন্দ চুপ।
গাধা শুধু তার বাঁ চোখ একটু টিপল।
লালচাঁদ ব্যাখ্যা দিলেন, এই চোখ টেপা অর্থাৎ প্রশ্ন অসংগত। গাধা বোঝাতে চায়—ঘাসের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি!
জামান মুখ কালো করে বললো, তোমরা গাধার চেয়ে চালাক!
ছাত্ররা উল্লাসে বলল, গাধানন্দ জিন্দাবাদ!
গাধা উৎসব: গাধামৃত মহোৎসব
এই সাফল্যের পর লালচাঁদ আয়োজন করলেন গাধামৃত মহোৎসব। পুরো গ্রামে ঢোল-তবলা বাজিয়ে মিছিল বের হলো। ছাগল বাঁশি বাজাচ্ছে, পাগলা হরি তালি দিচ্ছে, আর গাধানন্দ পিঠে বাচ্চা নিয়ে হেঁটে চলেছে।
প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘গাধার মুখে কবিতা’ প্রতিযোগিতা।
ড. চিকেনরানী কবিতা বললেন:
গাধা আমার গুরুজন,
চিবায় আর দেয় দিগ্বিজয় মনন!
পাগলা হরি বললো:
গাধার চোখে জ্ঞানের আলো,
লালচাঁদ হল মহান পণ্ডিত চালু!
সব শেষে গাধানন্দ নিজের মতো “হেঁয়্যি হেঁয়্যি” করে হেঁচকি তুলে শেষ বক্তৃতা দিলেন। সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানাল।
শেষ পরিণতি
একদিন সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি এলো—
গাধানন্দকে জাতীয় পশু শিক্ষক পুরস্কার দেওয়া হবে। লালচাঁদ সেই খবর পড়ে হঠাৎ জ্ঞান হারালেন। জ্ঞান ফিরে বললেন, আমি কি স্বপ্ন দেখছি? আমি তো শুধু মজা করছিলাম!
ছাত্ররা বললো, স্যার, আপনিই তো আমাদের শেখালেন—সবচেয়ে বড় জ্ঞান আসে হাসির ভেতর থেকে!
উপসংহার (আপডেট)
গল্পটি হয়তো একপলকে হাসির মনে হতে পারে, কিন্তু এর ভেতর লুকিয়ে আছে ব্যতিক্রমী চিন্তা—শিক্ষা যদি আনন্দে মেশে, তবে গাধাও অধ্যাপক হতে পারে!
তাই, সব গাধা যদি এমন শিক্ষায় লাগে, তাহলে হয়তো স্কুল থেকে কেউ আর পালাবে না—বরং নিজেই যাবে দৌড়ে, ঘাস খেতে না, জ্ঞান চিবোতে!
Comments
Post a Comment