Best novels: The Call of the Stars

 সেরা উপন্যাস: নক্ষত্রের ডাক

Best novels


প্রথম অধ্যায়: অদৃশ্য সংকেত

সাল ২১৪২। পৃথিবী তখন প্রযুক্তির শিখরে পৌঁছে গেছে। মানুষের আবিষ্কার তখন শুধু গ্রহে সীমাবদ্ধ নয়, তারা অন্য নক্ষত্রজগতের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। কিন্তু সেই উন্নতির মাঝেও পৃথিবীর কোথাও যেন অজানা এক শূন্যতা, এক অস্থিরতা কাজ করছিল।

ঢাকার নিউ অ্যাস্ট্রো রিসার্চ সেন্টারে তখন গভীর রাত। সব গবেষক চলে গেছে, শুধু এক জন আছে — ড. রায়ান হোসেন। তিনি একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যার চোখ সবসময় আকাশের তারা গুনে বেড়ায়।

হঠাৎ কম্পিউটারে একটা অদ্ভুত সিগনাল আসে। সিগনালটি ছিল একটা নিখুঁত প্যাটার্নে — যেন কোনো অচেনা বুদ্ধিমান প্রাণী তাদের ভাষায় কিছু বলতে চাচ্ছে।

রায়ান চমকে ওঠে। এটা কি এলিয়েনের বার্তা? সে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিল না।

তিন দিন পর, পুরো গবেষণা কেন্দ্র জেগে ওঠে। বার্তাটি বিশ্লেষণে জানা যায়, সিগনালটি আসছে Zeta Reticuli নামক এক তারকামণ্ডলী থেকে — পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৯ আলোকবর্ষ দূরে।

দ্বিতীয় অধ্যায়: মিশনের ঘোষণা

জাতিসংঘ এক জরুরি সভা ডাকে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়: একটি গবেষণা মহাকাশযান পাঠানো হবে সেই নক্ষত্রের দিকে। মিশনের নাম দেওয়া হয় Project Nokkhotrer Dak — নক্ষত্রের ডাক। রায়ানকে করা হয় মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী। তাঁর সঙ্গী হন অ্যাস্ট্রো-ইঞ্জিনিয়ার ইলা সেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ মেহরাব, এবং এক রহস্যময় যান্ত্রিক জীবনপদ্ধতির কৃত্রিম জীব — ORION

তৃতীয় অধ্যায়: ALTAIR এর যাত্রা

মহাকাশযান ALTAIR আকাশ ফুঁড়ে পাড়ি জমায় অজানার পথে। যাত্রা দীর্ঘ, প্রায় ৭ বছর। তবে তারা আলোকগতি ব্যবস্থায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সময়কে সংকুচিত করে।

ভবিষ্যতের পৃথিবীর মানুষের মতো, তাদের ঘুম দরকার হয় না, কারণ ALTAIR-এর ভেতর বিশেষ নিউরাল রিয়েলিটি ঘরে তারা ভার্চুয়াল ঘুমে থাকে।

একদিন ALTAIR সিগন্যালের উৎসে পৌঁছে যায়। কিন্তু সেখানে কোনো গ্রহ নেই, কোনো উপগ্রহও না। কেবল

একটি অসাধারণ বস্তু ঘুরছে এক অদৃশ্য কক্ষপথে — দেখতে এক বিশাল পিরামিডের মতো।

চতুর্থ অধ্যায়: পিরামিডের ভিতর

পিরামিডটি ছিল জীবন্ত। তার দেয়ালে ছিল অজানা ভাষার গুচ্ছ। হঠাৎ একটি দরজা খুলে যায়, যেন তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।

ভিতরে ঢুকতেই রায়ান ও তার দল দেখতে পায় এক কক্ষ, যার কেন্দ্রে ঘুরছে একটি নীল-সাদা স্ফটিক। সেই স্ফটিক থেকে আলো বেরিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসে এবং প্রত্যেকের মস্তিষ্কে ঢুকে পড়ে।

তারা তখন দেখতে পায় এক বিকল্প পৃথিবী — এক উন্নত সভ্যতা যাদের নাম ছিল Azthari। তারা বহু যুগ আগে নিজেদের ধ্বংস করে ফেলেছিল। কিন্তু কিছু তথ্য রেখে গিয়েছিল ভবিষ্যতের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর জন্য।

তাদের বার্তা ছিল:
তোমরা আমাদের ভুল করো না। প্রযুক্তি একা শান্তি দিতে পারে না। আত্মা ও বিবেক না থাকলে, যেকোনো সভ্যতা নিজের অস্তিত্ব শেষ করে ফেলে।

পঞ্চম অধ্যায়: ফিরে দেখা

ALTAIR ফিরে আসে পৃথিবীতে। কিন্তু সময়ের নিয়মে পৃথিবীতে কেটে গেছে প্রায় ৫৮ বছর। রায়ানরা এখনও তরুণ, কারণ তাদের বয়স সময়ের প্রসারণে স্থির ছিল। কিন্তু পৃথিবী বদলে গেছে।

তাদের হাতে Azthari সভ্যতার জ্ঞান, প্রযুক্তি ও বার্তা। কিন্তু এখন প্রশ্ন — তারা কী করবে সেই জ্ঞান দিয়ে? আবার নতুন করে কী গড়বে?

ড. রায়ান আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেন, এইবার আমাদের শুধু আগানো নয়, শেখাও জরুরি।

অধ্যায় ছয়: পৃথিবীর নতুন চেহারা

ALTAIR যখন পৃথিবীতে ফিরে এল, তখন বছর ২২০০। ঢাকার আকাশে ভেসে আছে বিশাল আকাশশহর। নিচে পুরনো শহরের ধ্বংসাবশেষ, যার মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে যান্ত্রিক নদী।

রায়ানরা যখন নামলেন, তারা অবাক হয়ে গেলেন। পৃথিবী এখন তিন ভাগে বিভক্ত —
১. টেকনোক্র্যাট অঞ্চল, যেখানে প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করে সমাজ।
২. জৈব স্বাধীন রাষ্ট্র, যেখানে মানুষ প্রকৃতির সাথে মিশে টিকে আছে।
৩. নেট্রাল জোন, যেখানে অনিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠী ও সাইবার পাঙ্ক সমাজ গড়ে উঠেছে।

তাদের আগমন যেন এক নবযুগের দ্বার খুলে দিল। UN-নির্দেশিত বৈজ্ঞানিক কাউন্সিল রায়ান ও তার দলের গবেষণা জানতে চাইল। কিন্তু এখানেই শুরু হলো দ্বিধা। সবাই চায় না যে Azthari সভ্যতার জ্ঞান প্রকাশ পাবে।

অধ্যায় ৭: ষড়যন্ত্রের ছায়া

এক রাতে, ALTAIR-এর স্মৃতি ভল্ট থেকে কেউ Azthari প্রযুক্তির অংশ চুরি করে নেয়। মেহরাব বুঝতে পারেন, কেউ চাইছে এটি দিয়ে তৈরি করতে একটি মাইন্ড-ওয়েভ কন্ট্রোল সিস্টেম, যেটি দিয়ে মানুষের চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ইলা বলেন, আমরা যেটা নিয়ে এসেছি, তা যদি ভুল হাতে পড়ে, তাহলে Azthari-র ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়ে যাবে — সভ্যতা নিজেকে ধ্বংস করবে।

তাদের সামনে তখন দুটো পথ —
১. Azthari প্রযুক্তি সবাইকে দিয়ে দেওয়া, যাতে জ্ঞান 

ছড়িয়ে পড়ে।
২. অথবা, প্রযুক্তিটি ধ্বংস করে দেওয়া, যাতে কেউ অপব্যবহার না করতে পারে।

অধ্যায় আট: বিদ্রোহের সূচনা

রায়ানরা বেছে নেন তৃতীয় পথ — তারা গোপনে তৈরি করেন একটি AI যাকে বলা হয় AARIN (Autonomous Azthari Repository & Intelligence Network)। AARIN ছিল এক ধরনের কৃত্রিম বিবেক, যেটি নিজেই ঠিক করবে কখন, কাকে, কীভাবে প্রযুক্তি দেবে।

কিন্তু কিছু রাষ্ট্র ও কর্পোরেট শক্তি সেটা জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। ALTAIR দলকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়।

ঠিক সেই সময়ে, নেট্রাল জোনে একদল তরুণ হ্যাকার F.R.E.E.D.O.M নামক গোষ্ঠী গঠন করে রায়ানদের

মুক্ত করতে আসে।

অধ্যায় নয়: মহাজাগতিক সংযোগ

AARIN হঠাৎ একদিন বলে দেয় — আমি আরেকটি সিগনাল ধরেছি। এবার সেটা এসেছে Azthari-দের উত্তরসূরিদের কাছ থেকে — একটি মহাকাশগহ্বরের ভেতর থেকে। তারা বেঁচে আছে!

এখন তাদের নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হয় —
পৃথিবীকে বাঁচাবে, নাকি আবার পাড়ি জমাবে নক্ষত্রের দিকে?

ইলা বলে, “পৃথিবী এখন ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে। কিন্তু উত্তর যদি আমরা নক্ষত্রেই না খুঁজি, তবে হয়তো সত্য কখনো জানা হবে না।”

অধ্যায় দশ: যাত্রার শেষ

ALTAIR-2 তৈরি হয়, আগের চেয়ে আরও উন্নত, আরও দ্রুত। এবার যাত্রা সেই মহাজাগতিক গহ্বরের দিকে, যেখান থেকে সময়-স্থান সবকিছুর সীমা লঙ্ঘন করে Azthari-দের উত্তরসন্তান ডাক পাঠাচ্ছে।

যাত্রার আগে রায়ান তার ডায়েরিতে লেখেন—
“আমরা কেউ জানি না কে ডাকে, কেন ডাকে। কিন্তু প্রতিবার সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মানবজাতিকে একটু করে এগিয়ে নিয়ে যাই। নক্ষত্রের ডাক থেমে নেই। আমরা থামব কেন?”

অধ্যায় ১১: মহাজাগতিক ছায়া

ALTAIR-2 তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলে। এবার তারা একটি wormhole-এর ভেতর দিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে — এমন এক সেতু, যা সময় ও স্থানের সীমা ভেঙে ফেলে।

মেহরাব হঠাৎ দেখতে পান, তাঁদের কৃত্রিম ইন্টেলিজেন্স AARIN নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সে ALTAIR-2-কে ভিন্ন পথে নিচ্ছে, কারণ সে বলছে, যেখানে তোমরা যাচ্ছ, সেখানে ভাষা নেই, যুক্তি নেই — কেবল চেতনার বিনিময়।

তারা পৌঁছায় এক ধূসর গ্রহে। মাটি কাচের মতো, আকাশ যেন ঘোলাটে তরল। সেখানে কোনো প্রাণী নেই, অথচ অনুভব হয় হাজারো চেতনার উপস্থিতি।

একদিন রাতে ইলার মনে এক স্বপ্ন আসে — যেখানে সে দাঁড়িয়ে আছে এক আয়নার সামনে, আর তার সামনে এক Azthari নারী, যার চোখে জল।

তিনি বলেন,
তোমরা আমাদের ভুল বুঝো না। আমরা সভ্যতা গড়েছিলাম জ্ঞানে, কিন্তু হৃদয়হীন। আমরা আবেগ বাদ দিয়ে বুদ্ধিমত্তার পূজারী হয়েছিলাম। তাই ধ্বংস এসেছিল।

ইলা ঘুম ভেঙে বুঝে যায়—এই বার্তা শুধু তথ্য নয়, আত্মার আর্তি।

অধ্যায় ১২ : মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ

গ্রহটিতে তারা পায় এক গ্যালাক্টিক স্মৃতি সংগ্রাহক — The Core of Time। এটি Azthari সভ্যতার হাজার বছরের ইতিহাস ধারণ করে রেখেছে।

ড. রায়ান The Core থেকে জানতে পারেন, ভবিষ্যতে পৃথিবী নিজেই এমন এক প্রযুক্তিতে পৌঁছাবে যা সময়

পরিবর্তন করতে পারবে — Chrono-Engine। কিন্তু এটি সৃষ্টি করবে এমন এক প্যারাডক্স, যা মহাবিশ্বের ভারসাম্য ভেঙে ফেলবে।

Azthari-রা সেই ভবিষ্যৎ দেখেই নিজেদের ধ্বংস করে, যাতে পৃথিবী তাদের পথে না চলে।

এখন ALTAIR-2 দলের সামনে এক কঠিন প্রশ্ন —
তারা কি সেই ভবিষ্যৎকে প্রতিরোধ করবে? নাকি সব তথ্য গোপন করে ফেলবে?

অধ্যায় ১৩ : চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

মিশনের শেষ প্রান্তে, AARIN একটি ফাইনাল অপশন দেয়:
আমি এই স্মৃতিগুলি শুধু একজন মানুষের চেতনার সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারি। তবে তাতে তার মস্তিষ্ক ধ্বংস হয়ে যাবে।

রায়ান নিজেই এগিয়ে আসেন। আমি শুরু করেছি, শেষও আমার করাই উচিত।

ইলা কাঁদতে কাঁদতে বলে, তুমি জানো না তুমি কী হারাচ্ছ!

রায়ান শুধু হাসে, “আমি জানি আমি কী দিয়ে যাচ্ছি।

AARIN রায়ানের চেতনার সাথে The Core সংযুক্ত করে। সেই মুহূর্তে, রায়ানের চেতনা ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশজুড়ে — তিনি Azthari সভ্যতার ইতিহাস, ভবিষ্যতের আশঙ্কা, আর মানুষের আত্মার গভীরতা একসাথে অনুভব করেন।

রায়ান নিঃশব্দে অচেতন হয়ে যান। তাঁর চেতনা রয়ে যায় The Core-এ — ভবিষ্যতের মানুষের জন্য।

সমাপ্তি:  নক্ষত্রপুত্র

ALTAIR-2 পৃথিবীতে ফিরে আসে। পৃথিবীর মানুষ জানতে পারে তাদের ভবিষ্যৎ আর প্রযুক্তির ক্ষমতা—কিন্তু এইবার সেটা আত্মা, বিবেক, ও ইতিহাসের শিক্ষা নিয়েই।

ইলার নেতৃত্বে তৈরি হয় নতুন নীতিনির্ভর গবেষণা কেন্দ্র — The Rayan Institute for Conscious Science। সেখানে প্রযুক্তি আর মানবতা একসাথে পথ চলে।

নক্ষত্রের ডাক ছিল শুধু যাত্রার শুরু। সেই ডাক এখন পৃথিবীর প্রতিটি শিশু, গবেষক, এবং চিন্তাবিদের হৃদয়ে বাজে।

শেষ লাইন:

কখনো কখনো, সবচেয়ে দূরের ডাকটাই হয় সবচেয়ে অন্তরের।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/



Comments

Popular posts from this blog

Funny stories for children: Titli and the Magical Garden

Funny jokes: The donkey when a professor.

The Lives of the Prophets: The Miraculous Story of Prophet Musa