গল্পের নাম শেষ চিঠি

 

গল্পের নাম: শেষ চিঠি

ধাপ ১: ছোট্ট গ্রামের ছেলে রাফি

রাফি ছিল এক পাহাড়ি গ্রামের শান্ত ও পরিশ্রমী ছেলে। তার বাবা ছিলেন একজন কাঠুরে, মা গৃহিণী। গরিব হলেও রাফি কখনও হতাশ হতো না। গ্রামের স্কুলে সে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ত, বিশেষ করে ইংরেজি ও গণিতে ছিল বেশ ভালো। কিন্তু শহরের ছেলেদের মতো সুযোগ তার ছিল না। তবুও সে স্বপ্ন দেখত—একদিন সে বড় অফিসার হবে এবং মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে।

ধাপ ২: হঠাৎ ঝড়ের মতো দুর্যোগ

একদিন হঠাৎ রাফির বাবা কাজ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা লাগবে। বাড়ির আর্থিক অবস্থা আরও

খারাপ হয়ে যায়। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় রাফির। সে শুরু করে চা বিক্রি। স্কুলের বন্ধুদের বই ধার নিয়ে রাতে আলো-ছায়ায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকে। মা তাকে থামাতে চায়, কিন্তু সে শুধু বলে, “মা, আমি হারবো না।”

ধাপ ৩: বোর্ড পরীক্ষার সাফল্য

চা বিক্রির মাঝেও রাফি নিজের প্রস্তুতি চালিয়ে যায়। সবাই বলে, “চা বিক্রেতা কি আর পরীক্ষায় ভালো করতে পারে?” কিন্তু রাফি প্রমাণ করে দেয়—চেষ্টা আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়। সে বোর্ড পরীক্ষায় পুরো জেলার মধ্যে প্রথম হয়! খবর ছড়িয়ে পড়ে পত্রিকায়, রেডিওতে। একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তার পড়ার সমস্ত দায়িত্ব নেয়। তার জীবন ঘুরে যায়।

ধাপ ৪: দীর্ঘদিন পর মায়ের কাছে চিঠি

রাফি এখন ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, পাশাপাশি সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। মায়ের শরীর ভালো না, তাই সে একদিন বসে লিখে:


“মা, তুমি বলেছিলে গরিব ঘরের ছেলে বড় কিছু হতে পারে না। কিন্তু দেখো, আমি চেষ্টা করছি। এই শেষ চিঠি, কারণ পরের বার সরাসরি তোমার কাছে এসে বলব—তোমার ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। মা, অপেক্ষা করো।”


ধাপ ৫: পরিণতি ও প্রেরণা

বছরখানেক পর, রাফি এক সকালে ইউনিফর্ম পরে মায়ের সামনে দাঁড়ায়—সে এখন একজন প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট। মা চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন না। তাদের ছোট্ট কুঁড়েঘর আজো আছে, কিন্তু তাতে আজ গর্ব, আনন্দ আর সম্মান ঝরে পড়ে।

Comments

Popular posts from this blog

বাবা ছেলের ২৫ টি পেটফাটা হাসির জোকস

যোগাযোগ

গোপনীয়তা নীতি