Cartoon Stories for Kids: The Magic Pumpkin a Wonderful Fairy Tale

 জাদুর কুমড়ো এক চমকপ্রদর রূপকথা:

Cartoon Stories for Kids

ধাপ ১: গরিব কৃষক আর রহস্যময় কুমড়ো 

এক ছিল এক গরিব কৃষক, নাম রমেশ। সে দিনাজপুর জেলার এক ছোট্ট গ্রামে বাস করত। গ্রামটা নদীর ধারে, চারপাশে সবুজ ধানক্ষেত, বাঁশঝাড় আর কলাগাছের সারি। রমেশের ঘর ছিল কুঁড়েঘর, যার চাল থেকে বৃষ্টি নামলে জল টুপটুপ করে পড়ত। তার জমি ছিল সামান্য, কিন্তু সে খুব সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ। তার একমাত্র সন্তান লাবণ্য, বয়স দশ-এগারো, বুদ্ধিমতী আর প্রাণখোলা হাসির মেয়ে। মা ছোটবেলায় মারা গেছেন, তাই লাবণ্যই ছিল তার বাবার সান্ত্বনা।

একদিন সকালে রমেশ বনে গেল জ্বালানি কাঠ কুড়োতে। ফেরার পথে ঘন ঝোপের ভেতর কিছু জ্বলজ্বল দেখতে পেল। কাছে গিয়ে দেখে—একটা কুমড়ো, কিন্তু কেমন যেন অদ্ভুত! এর গায়ে নীলচে আলো ঝিকমিক করছে। সে অবাক হয়ে কুমড়োটি তুলে নিল। কাঁধে কাঠ, হাতে কুমড়ো—সে বাড়ি ফিরল।

লাবণ্য অবাক হয়ে বলল, বাবা, এই কুমড়োটা যেন আকাশের তারা থেকে পড়েছে!

রাতের খাবারের সময় তারা কুমড়োটি রান্না করার কথা ভাবছিল। কিন্তু হঠাৎ ঘরের ভেতর মৃদু ফিসফিস আওয়াজ ভেসে এল: আমাকে কাটো না… আমি সাধারণ কুমড়ো নই। রমেশ আঁতকে উঠে চারপাশ দেখল। আবার আওয়াজ এল, ভয় পেও না, আমি জাদুকুমড়ো। তোমাদের গরিবি দূর করতে এসেছি। আমার গায়ে হাত রেখে একটি ইচ্ছে করো।

রমেশ দ্বিধাগ্রস্ত, কিন্তু লাবণ্য সাহস করে হাত রাখল। সে বলল, আমাদের ক্ষেতে যেন বৃষ্টি হয়, যেন আমরা আর ক্ষুধার্ত না থাকি। মুহূর্তেই আকাশে মেঘ ডাকল, বাতাস বয়ে গেল, আর টুপটাপ বৃষ্টি নামল। তারা দু’জন বিস্ময়ে তাকিয়ে রইল। কুমড়োটি নরম গলায় বলল, সৎ মানুষকে প্রকৃতি সাহায্য করে।

ধাপ ২: কুমড়োর প্রথম জাদু ও গ্রামের পরিবর্তন

পরের দিন সকালে তারা মাঠে গিয়ে দেখল—যেখানে গতকাল শুকনো ধানগাছগুলো ছিল, সেখানে এখন টলটলে সবুজ ধানের তরঙ্গ। গাছগুলো যেন নতুন প্রাণ পেয়েছে। গ্রামবাসীরা অবাক হয়ে জড়ো হলো। সবাই বলল, রমেশ, তুমি নিশ্চয় কোনো যাদুকরী কাজ করেছো! রমেশ মৃদু হেসে কিছুই বলল না।

লাবণ্য আবার কুমড়োর কাছে গেল। কুমড়ো সতর্ক করে বলল, শোনো, আমার জাদু শুধুমাত্র সৎ ও নিঃস্বার্থ মানুষের জন্য। লোভ করলে সর্বনাশ হবে। লাবণ্য মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।

ধীরে ধীরে রমেশের ক্ষেত থেকে এত বেশি ফসল উঠল যে সে প্রতিবেশীদের সাহায্য করল। যাদের ঘরে খাবার ছিল না, তাদের চাল-ডাল দিয়ে দিল। গ্রামের মানুষ খুশি হয়ে রমেশের প্রশংসা করল। কিন্তু গ্রামের ধনকুবের হারাধন মহাজন, যে সুদের টাকায় গরিবদের শোষণ করত, ঈর্ষায় পুড়ে যাচ্ছিল। সে ভাবল, এই কুমড়ো আমার হলে আমি সোনা-রূপায় ভরে যাব!

রাতে হারাধন চুপিচুপি রমেশের ঘরে ঢুকে জাদুকুমড়ো চুরি করল। বাড়ি ফিরেই সে কুমড়োর গায়ে হাত রেখে বলল, আমাকে পাহাড় সমান সোনা-রূপা দাও! মুহূর্তেই ঘর ধনরত্নে ভরে গেল। হারাধন খুশি হয়ে চিৎকার করল, কিন্তু তখন কুমড়ো অদ্ভুতভাবে নাচতে লাগল আর বলল, লোভী মানুষের জন্য সুখ অস্থায়ী। ধনরত্নগুলো হঠাৎ পাথরে পরিণত হলো, ঘরের দেয়াল ফেটে ভেঙে পড়ল। হারাধন আতঙ্কে দৌড়ে পালাল। কুমড়ো নিজে উড়ে রমেশের ঘরে ফিরে এল।

ধাপ ৩: লাবণ্যর সাহসিকতা ও রাজকন্যার উদ্ধার

কুমড়ো ফিরে এসে লাবণ্যকে বলল, রাজ্যের রাজকন্যাকে দুষ্ট জাদুকর বন্দি করেছে। তার মুক্তি ছাড়া রাজ্যে শান্তি ফিরবে না। তুমি কি সাহস দেখাতে পারবে? লাবণ্য বাবার দিকে তাকাল। রমেশ প্রথমে চিন্তিত হলেও বলল, সাহসী হৃদয় সব বাধা জয় করে।

কুমড়ো তাদের দিল এক জাদু গালিচা, যা উড়ে যেতে পারে। লাবণ্য আর রমেশ তাতে চড়ে পাহাড়, বন আর নদী পেরোল। চারদিকে হাওয়ার সুর আর গালিচার নরম দোলায় তারা মুগ্ধ হলো। দূরে দেখা গেল এক কালো দুর্গ, যার চারপাশে আগুনের খাল। জাদুকুমড়ো বলল, এই ফুলের রস ছিটিয়ে দিলে দুর্গের মায়াজাল ভেঙে যাবে।

লাবণ্য সাহস করে দুর্গের দেয়ালে রস ছিটিয়ে দিল। মুহূর্তেই আগুনের খাল নিভে গেল, দেয়ালগুলো ভেঙে

পড়ল। ভেতরে থেকে গর্জন করে বেরোল দুষ্ট জাদুকর। সে চিৎকার করল, কে সাহস করে আমার দুর্গ ভাঙল? কুমড়ো নীল আলো ছড়িয়ে জাদুকরকে দুর্বল করল। রমেশ মাটির মন্ত্র জপ করল, আর জাদুকর ধোঁয়ার মতো মিলিয়ে গেল।

রাজকন্যা তখন বাঁধা অবস্থায় কাঁদছিল। লাবণ্য তার দড়ি খুলে দিল। রাজকন্যা আবেগে তাকে জড়িয়ে ধরল এবং বলল, তুমি না এলে আমি কখনো মুক্তি পেতাম না! তারা সবাই গালিচায় চেপে আকাশপথে রাজপ্রাসাদে ফিরল।

ধাপ ৪: রাজ্যের পুরস্কার ও কুমড়োর বিদায়

রাজা তাদের দেখে বিস্মিত হলেন। রাজকন্যা বাবাকে সব বলল। রাজা আনন্দে ঘোষণা করলেন, রমেশ ও তার মেয়ে আমাদের বাঁচিয়েছে। তাদের জন্য থাকবে রাজকীয় পুরস্কার। তিনি রমেশকে উর্বর জমি, গরু ও একটি পাকা ঘর দিলেন। লাবণ্যকে তিনি রাজকন্যার সঙ্গী ও রাজপ্রাসাদের মানপদে নিযুক্ত করলেন।

হারাধন মহাজন লজ্জায় কুঁকড়ে গেল। সে রমেশের পায়ে পড়ে বলল, আমি লোভী ছিলাম। আমাকে ক্ষমা করো। রমেশ তাকে তুললেন এবং বললেন, ক্ষমা পেলে মানুষ বড় হয়। এবার থেকে গরিবদের সাহায্য করো, তাহলেই সত্যিকারের ধনবান হবে। হারাধন প্রতিজ্ঞা করল যে সে সুদের টাকা আর নেবে না এবং গ্রামের উন্নতিতে কাজ করবে।

সন্ধ্যার সময় জাদুকুমড়ো নরম গলায় বলল, আমার কাজ শেষ। মনে রেখো—সৎ হৃদয় ও দয়ার মন সব থেকে বড় জাদু। ধীরে ধীরে কুমড়োটি আকাশে উঠল এবং নীল তারায় রূপ নিল। লাবণ্য অশ্রুসিক্ত চোখে বলল, তোমার শেখানো সাহস আর দয়া আমরা কখনো ভুলব না।

তারপর থেকে গ্রাম ও রাজ্যে সুখ-শান্তি ফিরে এল। নদীর জলে মাছের ঝাঁক, মাঠে সোনালি ধান, আর শিশুদের মুখে হাসি—সব যেন নতুন প্রাণ পেল। গ্রামের বৃদ্ধারা রাতের আড্ডায় এই গল্প বলে ছোটদের শেখাতে লাগল যে সৎ কাজ, সাহস এবং সহমর্মিতা সবসময় পুরস্কৃত হয়, কিন্তু লোভ একদিন ধ্বংস ডেকে আনে। এইভাবে ঠাকুরমার ঝুলিতে জাদুর কুমড়োর গল্প স্থান পেল এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিশুদের হৃদয় ছুঁয়ে রইল।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url