Islamic Calligraphy: The Radiant Life of Hazrat Khadijah (RA)

খাদিজা (রা.) -ইসলামে সূর্য আলোয় প্রথম নার 

Islamic Calligraphy


পরিচয় ও বংশপরিচয়:

খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ (রা.) ছিলেন কুরাইশ বংশের একজন সম্ভ্রান্ত, বুদ্ধিমতী এবং উচ্চশিক্ষিত নারী। তার পিতার নাম ছিল খুয়াইলিদ ইবনে আসাদ, এবং মায়ের নাম ফাতিমা বিনতে যায়েদ। তিনি ছিলেন কুরাইশ গোত্রের এক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যবসায়ী পরিবারের কন্যা।

তার পূর্বপুরুষরা মক্কায় বাণিজ্য ও সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়ে সুপরিচিত ছিলেন। খাদিজা (রা.) সেই গৌরবময় বংশে জন্ম নিয়েও অত্যন্ত নম্র, উদার এবং পরহেজগার জীবন যাপন করতেন।

শৈশব ও কৈশোর:

খাদিজা (রা.)-এর শৈশব কাটে মক্কার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশে। তিনি ছোটবেলা থেকেই ছিলেন চিন্তাশীল, সততা-নিষ্ঠা ও সহমর্মিতার মূর্ত প্রতীক। বাল্যকালেই তিনি কাব্য, ইতিহাস, বাণিজ্য এবং পারিবারিক রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন। নারীদের মধ্যে তার মত উন্নতচিন্তা ও প্রজ্ঞা খুবই বিরল ছিল।

বৈবাহিক জীবন:

খাদিজা (রা.) দুইবার বিধবা হয়েছিলেন। প্রথম স্বামী আতীক ইবনে আইদ মাখযূম এবং দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন আবু হালা বিন মালিক তামীমী। উভয় স্বামীর মৃত্যুর পর, তিনি সম্পূর্ণরূপে স্বনির্ভর হয়ে পড়েন এবং নিজের শক্তিতে পরিবার ও ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন।

ব্যবসায়িক সাফল্য:

মহান খাদিজা (রা.) ছিলেন আরবের সবচেয়ে সফল নারী ব্যবসায়ী। মক্কার ধনী বণিকদের একজন হিসেবে তার নাম সবার আগে উচ্চারিত হতো। তার বাণিজ্য বহির্বিশ্ব পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল—শাম, ইয়ামান, বাশরা প্রভৃতি এলাকায় তার ব্যবসায়ী কাফেলা যেত।

তিনি ছিলেন খুবই বিচক্ষণ ও সতর্ক উদ্যোক্তা। তার ব্যবসায়িক নীতি ছিল সততা, ন্যায় ও সম্মান বজায় রেখে লেনদেন করা। এজন্য লোকেরা তাকে তাহিরা অর্থাৎ পবিত্র নারী নামে ডাকা শুরু করে।

প্রথম সাক্ষাৎ ও বিবাহের প্রস্তাব:

খাদিজা (রা.) ব্যবসার জন্য এক সময় এমন একজন বিশ্বাসযোগ্য ও সৎ প্রতিনিধি খুঁজছিলেন, যিনি তার মালামাল সিরিয়ায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি শুনলেন এক যুবকের নাম — মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (সা.)। তার সততা, বিশ্বস্ততা ও চরিত্রের পরিচিতি তখন পুরো মক্কায় ছড়িয়ে পড়েছিল।

তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে তার ব্যবসার দায়িত্ব দিলেন, সঙ্গে দিলেন নিজের বিশ্বস্ত সহকারী মাইসারাহ। সফরের শেষে মুহাম্মদ (সা.) প্রচুর লাভ করে ফিরলেন এবং মাইসারাহ তার চরিত্র, দয়া ও সুবিবেচনার প্রশংসা করলেন।

এরপর খাদিজা (রা.) নিজেই বিবাহের প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ (সা.) তার চাচাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। সে সময় মুহাম্মদ (সা.)-এর বয়স ছিল ২৫ বছর এবং খাদিজা (রা.)-এর বয়স ছিল ৪০।

বিবাহ ও পারিবারিক জীবন:

খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে মুহাম্মদ (সা.)-এর বিবাহ ছিল ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে আদর্শ দাম্পত্যজীবনের অনন্য দৃষ্টান্ত। এ দম্পতির ঘরে ছয়টি সন্তান জন্মগ্রহণ করেন — দুই ছেলে (কাসিম ও আবদুল্লাহ) এবং চার কন্যা (যয়নাব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম ও ফাতিমা)।

খাদিজা (রা.)-এর ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সমর্থনে মুহাম্মদ (সা.) ধীরে ধীরে এক মহান দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন। তিনি খাদিজা (রা.)-এর ঘরে প্রশান্তি, আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তা খুঁজে পেতেন।

প্রথম ওহি ও খাদিজার সাহস:

যখন মুহাম্মদ (সা.)-এর বয়স চল্লিশে পৌঁছাল, তিনি পাহাড়ের গুহায় ধ্যান করতে শুরু করলেন। গার-এ-হেরা নামক গুহায় তিনি একদিন প্রথম ওহি লাভ করেন। ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) এসে বললেন — ইকরা! (পড়ো!)।

মুহাম্মদ (সা.) ভীত ও অস্থির হয়ে ঘরে ফিরে আসেন এবং বলেন, আমাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দাও! খাদিজা (রা.) তার সমস্ত স্থিরতা ও ধৈর্য দিয়ে স্বামীকে সান্ত্বনা দেন। তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে আশ্বস্ত করে বলেন:

আল্লাহ্‌ কখনো আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করেন, দুর্বলদের বোঝা বহন করেন, দরিদ্রদের সাহায্য করেন, মেহমানদারি করেন, এবং সত্যের পথে অন্যদের সাহায্য করেন।


 এভাবে খাদিজা (রা.) হলেন প্রথম মুসলমান — সর্বপ্রথম ঈমান গ্রহণকারী। এ ছিল ইসলামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে ভূমিকা:

ইসলামের সূচনালগ্নে যখন মক্কার মানুষ নবী (সা.)-কে তিরস্কার ও নির্যাতন করতে শুরু করে, খাদিজা (রা.) ছিলেন তার একমাত্র আশ্রয়, সাহস ও সহযোগিতা। তিনি তার ধন-সম্পদ দিয়ে নবী (সা.)-কে সমর্থন করেন এবং ইসলাম প্রচারে বড় ভূমিকা রাখেন।

যখন মুসলমানদের ওপর অবরোধ আরোপ করা হয় (শিয়াবে আবু তালিব), খাদিজা (রা.)-ও নবীজির সঙ্গে সেখানে দুর্ভিক্ষ ও কষ্ট সহ্য করেন। সেসব কঠিন সময়ে তিনি কখনো অভিযোগ করেননি বরং ধৈর্য ও ঈমানের সঙ্গে পাশে ছিলেন।

মৃত্যু ও বিয়োগবেদনা:

ইসলামের নবীন ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন আসে — ১০ নবুয়তের বছরে খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল ঘটে। তার মৃত্যু হয় নবী (সা.)-এর সবচেয়ে দুঃখের সময়ে, যখন আবু তালিবও মারা যান। এই বছরকে বলা হয় — আমুল হুযুন অর্থাৎ শোকের বছর।

তার মৃত্যুর পরে নবী (সা.) বারবার তার কথা স্মরণ করতেন। তিনি বলতেন:

আল্লাহ আমার জন্য খাদিজার চেয়ে উত্তম স্ত্রী আর দেয়নি। যখন লোকে আমাকে অস্বীকার করেছিল, সে আমাকে বিশ্বাস করেছিল। যখন লোকেরা আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, সে আমাকে সমর্থন করেছিল। যখন কেউ কিছু দেয়নি, সে তার সবকিছু দিয়ে আমাকে সাহায্য করেছিল।


আত্মত্যাগ ও শিক্ষা:

খাদিজা (রা.) শুধু একজন স্ত্রী বা মাতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন নবুয়তের পথের প্রথম অনুগামী, একজন দয়ালু সমাজসংস্কারক, একজন স্বাবলম্বী নারী এবং একজন মহান ইসলামি দার্শনিক।

তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন — নারীর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল তার বংশে বা সম্পদে নয়, বরং তার ঈমান, সততা, দয়া ও আত্মত্যাগে নিহিত।

উপসংহার:

খাদিজা (রা.)-এর জীবন কাহিনী এক মহত্তম নারী নেতৃত্বের প্রতীক। তার জীবনে আমরা পাই—

*আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ী নারীর প্রতিচ্ছবি,

*দয়ালু স্ত্রী ও সহমর্মী সঙ্গীর অনন্য উদাহরণ,

*ইসলামের প্রথম ঈমানদার ব্যক্তিত্ব,

*একজন সাহসিনী যিনি কষ্টকে আলিঙ্গন করে সত্যের পথকে আঁকড়ে ধরেছিলেন।

খাদিজা (রা.)-এর জীবন আজও সকল নারীর জন্য একটি আদর্শ। তার মতো সাহস, ধৈর্য, আত্মত্যাগ ও ভালোবাসা নিয়ে যদি জীবনকে গড়তে পারি, তবে আমরাও আমাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বাতিঘর হতে পারি।

খাদিজা (রা.): ইসলামের আলোকবর্তিকা – দ্বিতীয় পর্ব

১. খাদিজা (রা.)-এর অনন্য ব্যক্তিত্ব ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য:

খাদিজা (রা.)-এর জীবন ছিল এক বিস্ময়কর ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। তিনি ছিলেন ব্যবসার জগতে সফল, আবার পারিবারিক জীবনে নম্রতা ও পরিপূর্ণতা অর্জনকারী এক নারী। নিম্নে তার কিছু বিশেষ গুণাবলির বিশ্লেষণ করা হলো:

(ক) প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা

খাদিজা (রা.) ছোটবেলা থেকেই গভীর পর্যবেক্ষণশক্তি, যুক্তিবোধ ও পরিপক্ব চিন্তার অধিকারী ছিলেন। তিনি যখন মুহাম্মদ (সা.)-কে বেছে নিলেন তার বাণিজ্যিক প্রতিনিধি হিসেবে, তখন অনেক সম্ভ্রান্ত বণিকও সেই দায়িত্ব পেতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু খাদিজা (রা.) মুহাম্মদ (সা.)-এর সততা ও সৌজন্য দেখেই তাকে দায়িত্ব দেন।

(খ) আত্মনিবেদন ও বিশ্বাস

তিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তের সত্যতায় এত দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন যে, প্রথম ওহি পাওয়ার পর তিনি কোন সংশয়ের বশে থাকেননি। একজন নবী হিসেবে স্বামীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখেছিলেন।

(গ) দয়ার সাগর

খাদিজা (রা.) ছিলেন এতটাই উদার যে, বহু এতিম, নিঃস্ব ও অসহায়কে তিনি তার সম্পদ থেকে সাহায্য

করতেন। তিনি দান করতেন গোপনে, কাউকে লজ্জায় না ফেলে।

(ঘ) আত্মনির্ভরশীলতা ও নেতৃত্বগুণ

অবিবাহিত ও বিধবা অবস্থায় নিজে ব্যবসা চালিয়ে মক্কার শীর্ষ ধনী নারীতে পরিণত হন, যা সেই যুগে ছিল অত্যন্ত বিরল। নারী হয়ে পুরুষশাসিত সমাজে নেতৃত্ব দেওয়া এক মহান দৃষ্টান্ত।

২. নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর খাদিজা (রা.)-এর প্রভাব:

খাদিজা (রা.) শুধু একজন স্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন নবী (সা.)-এর সবচেয়ে বড় মানসিক শক্তি ও আত্মিক সাহস। তার ভূমিকাগুলি ছিলো চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে:

(ক) দাম্পত্যজীবনের প্রেরণা

তিনি ছিলেন এমন এক সঙ্গী, যিনি নবী (সা.)-এর চিন্তা-ভাবনার শ্রদ্ধা করতেন এবং উৎসাহ দিতেন। নবী (সা.) খাদিজা (রা.)-এর জীবদ্দশায় আর কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহ করেননি। তার ভালোবাসা ও সম্মান ছিল নিঃসন্দেহে হৃদয়গ্রাহী।

(খ) নবুয়তের প্রাথমিক সময়ে মানসিক সহায়তা

প্রথম ওহি পাওয়ার পর মুহাম্মদ (সা.) আতঙ্কিত হয়ে

পড়েছিলেন। খাদিজা (রা.) তখন তার সাহস ও যুক্তিভিত্তিক মনোভাব দিয়ে নবীজিকে মানসিকভাবে স্থির রাখেন। তিনি বলেন:

আল্লাহ্‌ কখনও আপনাকে ছেড়ে দেবেন না। আপনি তো এত ভালো, এত সৎ, এত উপকারী মানুষ।

(গ) আর্থিক সহায়তা

ইসলামের প্রাথমিক সময়গুলোতে খাদিজা (রা.) তার সমস্ত সম্পদ ব্যয় করেন নবীজির জন্য ও ইসলামের প্রসারে। হিজরতের আগে তার সব সম্পদ ইসলামের জন্য উৎসর্গ করে দেন।

(ঘ) ইসলামী আহবানে সর্বপ্রথম সাড়া

তিনি ছিলেন সর্বপ্রথম মুসলিম নারী — সর্বপ্রথম বিশ্বাসী। তার এই অগ্রগামী ভূমিকা ইসলামী ইতিহাসে

সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এক অধ্যায়।

৩. কষ্টের সাথিনীত্যে খাদিজা (রা.):

খাদিজা (রা.) শুধু সুখে নয়, দুঃখে-দুর্দিনেও ছিলেন অটুট। তিনটি বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার আত্মত্যাগ ব্যাখ্যা করা যায়:

(ক) শিয়াবে আবু তালিবের অবরোধ

মক্কার কাফিররা মুসলমানদের বয়কট করেছিল — সামাজিক, অর্থনৈতিক ও খাদ্যদ্রব্য সবকিছু। তিন বছর খাদিজা (রা.) নবীজির সঙ্গে অবরোধে কাটান, একবিন্দু অভিযোগ ছাড়াই। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, দারিদ্র — কিছুই তাকে থামাতে পারেনি।

(খ) সন্তান হারানোর বেদনা

তিনি কাসিম ও আবদুল্লাহ — দুই পুত্রকে শৈশবে হারান। তবুও ধৈর্য ও তাওয়াক্কুলে ছিলেন অটল। নবীজির কাঁধে মাথা রেখে দুঃখ ভাগ করে নিতেন।

গ) কাফিরদের বিদ্রূপ

খাদিজা (রা.)-এর অনেক আত্মীয় কাফের ছিল, তারা তাকে নানা বিদ্রূপ করত। কিন্তু তিনি কখনো তাদের ভয় পাননি, বরং ইসলামের ওপর আরো দৃঢ় হয়েছিলেন।

৪. মৃত্যুর বেদনা ও পরবর্তী সম্মান:

খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যু ঘটে নবুয়তের দশম বছরে (৬২০ খ্রিঃ)। নবীজির জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক বছর ছিল সেটি। নবীজির ভাষায়:

আমি যখন একা হয়ে যেতাম, খাদিজা আমাকে সঙ্গ দিত। আমি যখন ভয় পেতাম, সে বলত— ভয় নেই, আপনি নবী। যখন সবাই আমাকে ত্যাগ করে, সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলত — আমি আছি আপনার পাশে।

মৃত্যুর পর আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে সম্মান

জিবরাইল (আ.) একদিন নবী (সা.)-কে বলেন:

খাদিজার জন্য আল্লাহ সালাম পাঠাচ্ছেন এবং জানাচ্ছেন জান্নাতে তার জন্য একটি মুক্তার প্রাসাদ প্রস্তুত আছে, যেখানে কোনো ক্লান্তি বা শব্দ থাকবে না।(বুখারি, মুসলিম)

৫. ইসলামের ইতিহাসে খাদিজা (রা.)-এর অবদান:

(ক) নারীশক্তির প্রতীক

তিনি প্রমাণ করেন, একজন নারী সমাজের নেতৃত্ব দিতে পারেন, ব্যবসা করতে পারেন, এবং দাম্পত্যজীবনে পরিপূর্ণতা আনতে পারেন — সবই ইসলামের ছায়াতলে।

(খ) আত্মত্যাগের মডেল

তার ধন-সম্পদ, আরাম-আয়েশ, সামাজিক মর্যাদা — সবকিছু ত্যাগ করে শুধু আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য কাজ করেছিলেন। নবীজির ভাষায়:

তিনি আমাকে তাঁর ধনসম্পদ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন যখন কেউ দেয়নি।

  গ) নবীজির হৃদয়ে স্থায়ী স্থান

নবীজির পরবর্তী স্ত্রী আয়েশা (রা.) বলেন:

আমি যত নারীকে দেখেছি, খাদিজাকে দেখিনি, তবুও তার প্রতি ঈর্ষা হতো, কারণ নবী (সা.) সর্বদা তাকে স্মরণ করতেন।

 ৬. আধুনিক নারীদের জন্য শিক্ষণীয় দিক:

আজকের দিনে খাদিজা (রা.)-এর জীবন হতে নারীরা যা শিখতে পারেন তা হলো:

*আত্মবিশ্বাস ও সততা — জীবনে সফলতার মূল।

*পরিবারের প্রতি সমর্থন — ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বন্ধন।

*সামাজিক অবদান — নারী হিসেবে দান, সহানুভূতি ও নেতৃত্ব।

*ধৈর্য ও ঈমান — পরীক্ষার সময়েও স্থির থাকা

এক মহীয়সী নারীর চিরন্তন আলো:

খাদিজা (রা.)-এর নাম আজো মুসলমানদের হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় উচ্চারিত হয়। তার জীবনী শুধু ইতিহাস নয়, এটি এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা, এক বিপ্লবী নারীচরিত্র, যার আলো যুগে যুগে নারীদের পথ দেখাবে।

তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম নারী আশ্রয়, প্রথম নারী মুজাহিদা, প্রথম নারী ঈমানদার — এবং প্রথম নারী শহিদ যার আত্মত্যাগে ইসলাম দাঁড়াতে পেরেছিল।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url