রূপকথার সেরা ভূতের গল্প মায়ার প্রতিশোধ

 এটি একটি রূপকথার ভয়ংকর ভূতের গল্প। গল্পটি মজাদারও  বটে। এই ভূতের গল্পে কিছু শিক্ষণীয় বিষয় আছে।  চলুন নিচে থেকে সেই ভূতের গল্পটি জেনে আসি:

একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল, নাম ছিল বটতলা। গ্রামের এক কোণায় ছিল বিশাল একটি বটগাছ। সেই গাছটি ছিল গ্রামের সবথেকে পুরনো এবং বড় গাছ। গ্রামের বয়স্ক মানুষরা বলতেন, বটগাছটির নীচে রাতে কখনোই যাওয়া উচিত নয়। কারণ সেই গাছের নিচে থাকত এক ভয়ঙ্কর ভূত, নাম ছিল তার মায়া।

মায়া ছিল এককালে গ্রামের একজন সুন্দরী নারী। তার রূপের খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু মায়ার জীবনে একদিন ঘটে যায় ভয়ঙ্কর এক দুর্ঘটনা। গ্রামের জমিদার তাকে নিজের স্ত্রী করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মায়া তা মেনে নিতে রাজি হয়নি। সেই জমিদার প্রতিহিংসার বশে এক রাতে মায়াকে তুলে নিয়ে আসে এবং তাকে মেরে ফেলে সেই বটগাছের নিচে পুঁতে রাখে।


মৃত্যুর পর মায়ার আত্মা শান্তি পায়নি। সে হয়ে উঠেছিল এক ভয়ঙ্কর ভূত, প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকা আত্মা। প্রতি রাতে মায়ার আত্মা সেই বটগাছের নিচে ঘুরে বেড়াত। গ্রামের মানুষদের সে বিভিন্নভাবে ভয় দেখাত, যারা রাতে সেই গাছের নীচে যেতে দুঃসাহস দেখাত, তারা আর কখনো ফিরে আসেনি। কেউ কেউ বলত, রাতের বেলায় বটগাছের নিচে গেলে মায়া তাদের নিয়ে যায় আর তাদের আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না।

একদিন গ্রামের এক সাহসী যুবক, নাম ছিল রোহান, সে ঠিক করল যে সে এই ভূতের রহস্য উদ্ঘাটন করবে। রোহান বটগাছের নিচে এক রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাত গভীর হতে শুরু করে, চাঁদের আলো গাছের পাতার মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছিল। হঠাৎ, একটি শীতল বাতাস বয়ে যায় এবং রোহান দেখে সামনে একটি মায়াবী ছায়া। ছায়াটি ধীরে ধীরে রূপ নেয়, এবং রোহান দেখল মায়া তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।


মায়ার চোখে ছিল প্রতিশোধের আগুন, সে রোহানের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। রোহান আতঙ্কিত হয়ে পড়ল, কিন্তু সে সাহস হারায়নি। সে জোরে চিৎকার করে উঠল, "তুমি শান্তি পাবে না যতক্ষণ না তোমার মৃত্যুর কারণের প্রতিশোধ নেওয়া হয়।"

মায়ার চোখে জল চলে আসে, সে ধীরে ধীরে বলে, "আমার আত্মা শান্তি পাবে, যদি তুমি আমার হত্যাকারী জমিদারকে শাস্তি দিতে পার।"


রোহান প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে জমিদারের কুকর্ম ফাঁস করবে। পরের দিন, রোহান গ্রামে ফিরে এসে জমিদারের অপকর্ম জনসমক্ষে প্রকাশ করে। গ্রামের লোকেরা একসঙ্গে মিলে জমিদারের বাড়িতে গিয়ে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেয়।


সেই রাতে, রোহান আবার বটগাছের নিচে গেল। কিন্তু এবার মায়া আসেনি। সে চিরতরে শান্তি পেয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। বটগাছের নীচে আর কখনোই কেউ অদৃশ্য হয়ে যায়নি, এবং বটতলা গ্রামের মানুষরা অবশেষে এক শান্তির নিশ্বাস ফেলল।

এরকম আরো রূপকথার বিভিন্ন ধরনের গল্প জানতে এই ওয়েবসাইটটির সঙ্গে থাকুন। এখানে প্রতিদিন নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আপডেট হয়। এই ওয়েবসাইটটির লিংক https://www.mahadistoryworld.com/

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url